প্রথম প্রোগ্রাম
আগের পর্বে আমরা জেনেছি প্রোগ্রামিং কি এবং কেন? এখন প্রোগ্রামিং শুরু করার পালা। আপনি যদি আমার আগের পর্বের লেখাটি না পড়ে থাকেন তাহলে পড়ে আসতে পারেন। তাহলে এই লেখাটি পড়ে বুঝতে সুবিধা পাবেন। আপনি প্রোগ্রামিং এ নতুন হয়ে থাকলে প্রথম থেকে পড়ে আসাটাই ভালো হবে। হঠাত করে মাঝখান থেকে একটি পর্ব পড়া শুরু করলে হতাশা ছাড়া আর কিছু পাবেন কিনা বলতে পারছি না। আরেকটা বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে, প্রোগ্রামিং কিন্তু সাধারণ পড়াশোনার মত না। সাইকেল চালানো শেখা বা সাঁতার কাটতে শেখা যেমন বই পড়ে হয় না, তেমন প্রোগ্রামিং ও শুধু পড়লে কাজ হবে না। প্রোগ্রামিং এর জন্য পড়ার পাশাপাশি চাই নিয়মিত প্র্যাক্টিস।
আশা করি আপনি Codeblocks সফটওয়্যার টি ইনস্টল করতে পেরেছেন বা আপনি যদি মোবাইল দিয়ে শিখতে চান তাহলে আশা করছি কোন সফটওয়্যার ইনস্টল দিয়ে নিয়েছেন। প্রথমে একটি প্রোগ্রাম লিখে দিচ্ছি, যে প্রোগ্রাম এর কাজ কোন লেখাকে একটি স্ক্রিনে দেখানো। প্রোগ্রাম লিখতে হলে আমাদের অবশ্যই একটি ফাইল এর দরকার হবে, Codeblocks open করলে দেখবেন উপরে একেবারে বামপাশের কোনায় File লিখা আছে। File এ ক্লিক করার পর New তে যাবেন, দেখবেন Empty file আসবে, আপনি Empty file সিলেক্ট করবেন। এখন ফাইল এর নাম ও ত দিতে হবে, আর এটা যে সি++ এর ফাইল তা বুঝব কীভাবে? এর জন্যে নামের শেষে .cpp দিতে হবে আর নাম লিখার জন্য আবার File এ গেলে দেখবেন Save file আছে। আপনি Save file এ ক্লিক করার পর এখন ফাইলের নাম দিতে পারবেন। যে উইন্ডো টি এসেছে তার নিচের দিকে দেখুন File name: এর ডানপাশে ঘর আছে, সেখানে কিছু লেখা থাকলে তা কেটে দিয়ে লিখুন Hello.cpp এরপর Save বাটনে ক্লিক করে দিন। এখন নিচের ছবিতে দেওয়া প্রোগ্রাম টি টাইপ করে লিখে ফেলুন।
Code: 10 |
১ নাম্বার লাইনে আছে #include <iostream> এটি হচ্ছে হেডার ফাইল। এর কাজ হচ্ছে ইনপুট/আউটপুট কীভাবে নিবে বা দেখাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা। যেমন cout কীভাবে আউটপুট দেখাবে তা বলে দেওয়া আছে এই হেডার ফাইল এর ভিতরে। আমরা তা দেখতে পারছি না কিন্তু এর সুবিধা ঠিকই পাচ্ছি। আমাদের কষ্ট করে অত বিস্তারিত না লিখে শুধু cout লিখে কোডে দেখানোর মত যা লিখব তাই দেখিয়ে দিবে। এরকম বিভিন্ন কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হেডার ফাইল আছে। ২ নাম্বার লাইন এমনিই ফাকা রেখেছি। ৩ নাম্বার লাইনে যা আছে তা নিয়ে আপাদত মাথা না ঘামালেও চলবে, আপাদত ধরে নেই সি++ এর যে প্রোগ্রামই লিখি না কেন এই লাইন লিখতে হবে। ৪ নাম্বার লাইন ও এমনিই ফাকা রেখেছি। ৫ নাম্বার লাইনে শুরু হয়েছে মেইন ফাংশন। প্রত্যেকটি সি++ প্রোগ্রাম এ একটি মেইন ফাংশন থাকবেই। প্রোগ্রাম কাজ করা শুরু করে মেইন ফাংশন থেকেই। ৬ নাম্বার লাইনে মেইন ফাংশনের বডি শুরু হয়েছে। ৭ নাম্বার লাইন প্রথমেই কিছুটা ব্যাখ্যা করেছি। cout হচ্ছে আউটপুট দেখানোর জন্য। আপনি cout লিখে উপরের মত ডাবল কোটেশন এর ভিতরে যা লিখবেন আপনার প্রোগ্রাম তাই স্ক্রিনে দেখাবে। আর শেষে endl মানে নিচে নতুন লাইনে চলে যাবে। ৮ নাম্বার লাইনও এমনিই ফাকা। ৯ নাম্বার লাইনে জিরো রিটার্ন করে দিয়েছি। প্রথম পর্বে বলেছি ০ মানে অফ আর ১ মানে অন। সুতরাং কোন ফাংশন কে বন্ধ করতে চাইলে ০ রিটার্ন করে দিলেই হবে। ১০ নাম্বার লাইনে মেইন ফাংশনের বডি শেষ হয়েছে।
এবার প্রোগ্রাম ত লেখা হল কিন্তু আউটপুট দেখব কীভাবে? এর জন্য প্রোগ্রাম আগে বিল্ড করতে হবে এবং পরে রান করতে হবে। বিল্ড মানে আমি যে প্রোগ্রাম টি লিখলাম তা কম্পাইলার দেখবে ঠিক আছে কিনা মানে ৭ নাম্বার লাইনের শেষে যদি আমি সেমিকোলন না দিতাম তাহলে এটা একটা ভুল/Error আর সি++ এর প্রোগ্রামে ফাংশন ছাড়া প্রতিটি স্টেটমেন্ট এর শেষেই সেমিকোলন দিতে হয়। রান করলে আউটপুট দেখাবে। বিল্ড এবং রান আলাদা আলাদা করা যায় আবার ২টা একসাথেও করা যায়। নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে বিল্ড এবং রান ২টা একসাথে করা যায়।
Code: 10 |
ছবিতে দেখানো তীর চিহ্নিত বাটন টি ক্লিক করলেই হবে। আর বিল্ড ও রান আলাদা আলাদা করতে চাইলে তীর চিহ্নিত বাটন টির বাম পাশের ২টা বাটন দিয়ে কাজ করা যাবে। আমি আর বলে দিলাম না কোনটার কাজ কি। কারণ বাটন গুলোর উপর মাউস কার্সর রাখলেই লেখা উঠবে।
রান করার পর আমাদের এরকম একটি কালো স্ক্রিন সামনে আসবে এবং তা তে আউটপুট দেখাবে,
Output: 10 |
এখানে প্রথমে আমরা যা প্রিন্ট করার জন্য লিখেছিলাম তাই দেখিয়েছে। পরের লাইন ফাকা হওয়ার কারণ আমরা cout এর ভিতরে Hello World! লিখে endl লিখেছিলাম তাই। পরের লাইনে Process returned 0 (0x0) মানে আমরা শেষে জিরো রিটার্ন করে দিয়েছিলাম তাই আর execution time : 0.198 s মানে আমাদের প্রোগ্রাম টি চলতে 0.198 সেকেন্ড সময় লেগেছে। পরের লাইনে Press any key to continue. মানে কিবোর্ড থেকে যে কোন কি চাপলেই স্ক্রিনটি চলে যাবে এবং আপনি পুনরায় বিল্ড এবং রান করতে পারবেন।
আশাকরি আপনি প্রোগ্রাম টি লিখে রান করতে পেরেছেন। না পারলে আবার পড়ে ভালো করে মিলিয়ে দেখুন। মনে রাখবেন, যন্ত্রের কিন্তু বুদ্ধি নেই তাই যন্ত্র ভুল করতে পারে না আর মানুষের বুদ্ধি আছে তাই মানুষ ভুল করতে পারে। তাই যন্ত্র যদি বলে আপনি ভুল করেছেন বা প্রত্যাশিত আউটপুট না দেয় তাহলে সবসময় মেনে নিবেন আপনি ভুল করেছেন বা ভুল নির্দেশনা দিয়েছেন, তাই ভালো করে ভেবে দেখুন কি ভুল করেছেন। এই অধ্যায় এই পর্যন্তই। পরের অধ্যায়ে দেখব ডাটা টাইপ নিয়ে। মোবাইল দিয়ে যারা প্র্যাক্টিস করবেন তারা যে অ্যাপস টি ইনস্টল দিয়েছেন সেই অ্যাপস এর নাম লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলেও হয়ত পেয়ে যাবেন কীভাবে ঐ অ্যাপস এ প্রোগ্রাম লিখে রান করতে হয়।
বোনাসঃ নতুন ফাইল নেওয়ার কাজ, ফাইল সেইভ করার কাজ এবং বিল্ড ও রান করার কাজ আপনি কিবোর্ড থেকেও করতে পারবেন। নতুন ফাইল নেওয়ার জন্য Codeblocks open করে Ctrl + Shift + n চাপলেই হবে, ফাইল সেইভ করার জন্য Ctrl + s এবং বিল্ড ও রান করার জন্য F9(ল্যাপটপ হলে Fn + F9 চাপতে হতে পারে)।
ভাইয়া, যখন কোনো অনলাইন কম্পাইলার ব্যবহার করি,তখন তো সি++ এর ভার্সন( c++, c++14, c++ 17 ) সিলেক্ট করতে বলে। এই বিষয়টা বুঝি না, দয়া করে এ নিয়ে একটু লিখলে ভাল হয় ।
ReplyDeleteআপনি যদি বিগিনার হয়ে থাকেন তাহলে আপাদত বেসিকে বা সহজ সহজ প্রবলেম সলভিংয়ে মন দেওয়াই ভালো। এগুলো একটু এডভান্সড লেভেলের জিনিস যদিও খুব বেশি পার্থক্য নেই যদি না আপনি C++99 বা তার আগের ভার্সন ব্যবহার করেন। তবে C++11, C++14 & C++17 থেকে কোন একটা ব্যবহার করাই ভালো।
Deleteসময় ও সুযোগ পেলে চেষ্টা করব এইটা নিয়ে কিছু লিখা যায় কিনা।
আর এত দেরিতে রিপ্লে দেওয়ার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত।